বৃহস্পতিবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

English

ক্যান্সার ও সংক্রমণ রোধে কার্যকর ন্যানোকম্পোজিট উদ্ভাবন করল ইরান

পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ১, ২০২৫ 

news-image

জালাল আদ-দ্বীন মুহাম্মদ বালখি ওরফে মওলানা বা রুমি আজও একটি বৈশ্বিক সাহিত্যিক ও আধ্যাত্মিক প্রতীক। শামসের সাথে গভীর বন্ধুত্ব রুমিকে ফারসি সংস্কৃতিতে এক শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিতে উৎসাহিত করে।

রুমি ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পারস্য সাম্রাজ্যের পূর্ব উপকূলে, বর্তমান আফগানিস্তানের বালখ শহরে জন্ম নিয়েছিলেন। তাঁর বাবা-মা ছিলেন ফারসিভাষী। তিনি অবশেষে বসতি স্থাপন করেন কোনিয়া শহরে, যা বর্তমানে তুরস্কের অংশ।

জালাল আদ-দ্বীন মুহাম্মদ বালখি বিশ্বজুড়ে রুমি নামে পরিচিত। তিনি শুধু ফারসি সাহিত্যের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবেই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য একজন প্রখ্যাত মরমি সাধক ও কবি হিসেবেও সম্মানিত।

ইরানি ক্যালেন্ডারে মেহের মাসের অষ্টম দিনটি ইরানিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক দিবস। এদিন তারা বিখ্যাত ইরানি কবি রুমিকে সম্মান জানান, ফারসি কবিতায় যার মর্যাদা সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত।

এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কটি রুমিকে তাঁর বিশাল ও স্থায়ী কর্মরাজি সৃষ্টিতে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর কবিতা প্রায়শই ‘মসনবী’ এবং ‘দিওয়ান-এ শামস-এ তাবরিজি’-এর মতো শ্রেষ্ঠ রচনাগুলিতে শ্রেণিবদ্ধ রয়েছে। এতে অধিবিদ্যা, নীতিশাস্ত্র এবং ঐশী ভালোবাসার মতো জটিল বিষয়গুলি অন্বেষণ করা হয়েছে। ফারসি ভাষায় লেখা তাঁর পঙ্‌ক্তিগুলি মানব আত্মার জন্য একটি সার্বজনীন ভাষা প্রকাশ করেছে, যা তাঁকে ‘মওলানা’ অর্থাৎ ‘আমাদের গুরু’ উপাধি দিয়েছে।

রুমিকে ফারসি সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি এবং আন্তর্জাতিকভাবে একজন বিশিষ্ট কবি ও মরমি সাধক হিসাবে গণ্য করা হয়। রুমির জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ঘটে ১২৪৪ সালের ৩০ নভেম্বর, যখন তিনি কোনিয়ার রাস্তায় পরিব্রাজক দরবেশ ও সাধু শামস আদ-দ্বীন তাবরিজির সাথে সাক্ষাৎ করেন।

সম্ভবত তিনি শামসের সাথে প্রথম সিরিয়ায় দেখা করেছিলেন। শামস-এ তাবরিজি (১১৮৫-১২৪৮) মওলানার আধ্যাত্মিক গুরু হয়েছিলেন এবং রুমির কাব্যিক কাজগুলিতে, বিশেষ করে ফারসি ভাষায় রচিত ‘দিওয়ান-এ শামস-এ তাবরিজি’তে গভীর শ্রদ্ধার সাথে তাঁকে স্মরণ করা হয়েছে।

মওলানার কবিতাকে প্রায়শই কয়েকটি স্বতন্ত্র শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়: রুবাইয়াৎ এবং গজল। তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতা ও চিঠি এবং অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত ছয়টি উপদেশ‌ নিয়ে ‘মসনবী’র ছয়টি খণ্ড রচিত হয়েছে।

রুমির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ হলো ‘মসনবী’ যা মসনবী-এ মা’নাবী (আধ্যাত্মিক দ্বিপদী) নামেও পরিচিত। এটি তিনি ফারসি ভাষায় রচনা করেছিলেন। ছয় খণ্ডের এই শ্রেষ্ঠ কাজের জন্য তিনি বিশেষভাবে বিখ্যাত, যা বহু পণ্ডিতের কাছে ইসলামী মরমিবাদের অন্যতম সেরা অর্জন হিসাবে বিবেচিত।

তাঁর ফারসি কবিতার আরেকটি সুপরিচিত সংগ্রহ হলো ‘দিওয়ান-এ শামস-এ তাবরিজি’, যেখানে শামস তাবরিজিকে উৎসর্গীকৃত কবিতা রয়েছে।
রুমির কবিতা একটি গভীর মরমি গুণ দ্বারা চিহ্নিত, যা মানব আত্মার সার্বজনীন ভাষার সাথে অনুরণিত হয়।

মসনবী হলো একটি ব্যাপক মরমি রচনা, যেখানে অধিবিদ্যা, ধর্ম, নীতিশাস্ত্র এবং মরমিবাদের মতো জটিল বিষয়গুলি অন্বেষণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এই চ্যালেঞ্জগুলির সমাধানও প্রস্তাব করা হয়েছে।

তাঁর কবিতা ইরানের অনেক শহরের দেয়ালে স্পষ্টভাবে প্রদর্শিত হয়, ফারসি গানে সুরারোপিত হয় এবং শিক্ষামূলক পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৩শ শতাব্দীর কোনিয়ায় একটি রূপান্তরকারী বন্ধুত্ব থেকে জন্ম নেওয়া তাঁর কথাগুলি এখন বিশ্বজুড়ে মানুষকে জ্ঞান এবং সান্ত্বনা দেয়। তাঁর প্রভাব বিভিন্ন শৈল্পিক অভিব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সুরকার এবং ভিজ্যুয়াল শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করে, যারা তাঁর পংক্তির উচ্ছ্বসিত চেতনাকে ধরতে চান। তাঁর শিক্ষা বিশ্বব্যাপী আন্তঃধর্মীয় সংলাপ এবং আধ্যাত্মিক আন্দোলনগুলিতে উর্বর ভূমি খুঁজে পেয়েছে। তার দর্শন ভালোবাসা, সহনশীলতা এবং অভ্যন্তরীণ শান্তির উপর জোর দেয়। সূত্র: মেহর নিউজ