জাতিসংঘে ইরানি রাষ্ট্রদূত: ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি
পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ২৬, ২০২৫
ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় ইরানের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি বলেছেন, ইহুদিবাদী দখলদার শাসনব্যবস্থা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি স্পষ্ট ও গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পার্সটুডে জানিয়েছে, সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় ইরানের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থাকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর ও স্পষ্ট হুমকি হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, এই শাসনব্যবস্থা তার সামরিক আগ্রাসন এবং ব্যাপক অপরাধযজ্ঞের মাধ্যমে এ অঞ্চলসহ বিশ্বে অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইরাভানি আরো বলেন, গত দুই বছরে গাজায় নজিরবিহীন গণহত্যামূলক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তাদের হামলায় ২০,০০০ শিশুসহ ৬৮,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। তাছাড়া হাসপাতাল, স্কুল এবং পানি সরবরাহ ব্যবস্থাসহ গাজার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজা উপত্যকা ইসরাইলি আক্রমণে একটি বিধ্বস্ত ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ইরানও ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর সরাসরি আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ২০২৫ সালের জুনে ইরানের আবাসিক এলাকা এবং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ১,১০০ জন বেসামরিক নাগরিক শহীদ হন এবং ৫,৭০০ জনেরও বেশি আহত হন।
আমির সাঈদ ইরাভানি আরও বলেন, গাজায় গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করা, দখলদার বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং উপত্যকায় মানবিক সহায়তার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের দাবি জানাচ্ছে ইরান।
তিনি বলেন, ‘ন্যায়বিচার অর্জনের জন্য যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনাকারী এবং অপরাধীদের বিচার করা প্রয়োজন এবং ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা যে দায়মুক্তির সংস্কৃতি ভোগ করেছে তার অবশ্যই ইতি টানতে হবে।’
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রতিনিধির দাবি প্রত্যাখ্যান করে ইরানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান জাতিসংঘ সনদের নীতিমালা মেনে চলে। অবৈধ মার্কিন সামরিক উপস্থিতি এবং ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার প্রতি নিঃশর্ত সমর্থনকে এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ বলে অভিহিত করে তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের মিশন বাস্তবায়নে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে, ওয়াশিংটন ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থার অপরাধের সহযোগী হিসেবে স্বীকৃত।’
গতকাল বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের সভায় ইরানের রাষ্ট্রদূর তার বক্তৃতার শেষ দিকে গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা এবং বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার ভূমিকার উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।#
পার্সটুডে