হামলায় অংশ নেওয়া ইসরায়েলি পাইলটদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন ইরানের
পোস্ট হয়েছে: আগস্ট ৭, ২০২৫

তেহরানের বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচনায় হামলায় অংশ নেওয়া ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর পাইলট, কমান্ডার এবং ড্রোন অপারেটরদের পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল উন্মোচন করেছে ইরানের গোয়েন্দারা। ইরানের সরকারি সম্প্রচার চ্যানেল এবং দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম শনিবার এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, ইরানি গোয়েন্দারা ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর কর্মীদের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিবরণ উদঘাটন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তাদের পরিচয়, বসবাসের স্থান, অপারেশনাল ইউনিট, সামরিক ঘাঁটি এবং অন্যান্য অপরাধে ভূমিকার তথ্য।
প্রতিবেদনগুলিতে তুলে ধরা হয়েছে, টেলিভিশন সম্প্রচারের সময় ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলি নিয়মিতভাবে পাইলটদের মুখ ঝাপসা করে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও, গোয়েন্দা সদস্যরা তাদের পরিচয় উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছেন।
প্রতিবেদনগুলিতে দুই পাইলটের নাম “স্কোয়াড্রন ১১৯ (“ব্যাট” স্কোয়াড্রন) এর ডেপুটি কমান্ডার মেজর ইয়েল অ্যাশ” এবং তার স্বামীর নাম বার প্রিন্স হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৭৩ সালে ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধের সময় নিখোঁজ হওয়া মেজর শিমন অ্যাশের নাতনী হিসেবে অ্যাশকে শনাক্ত করা হয়। ইসরাইল সরকার এবং আরব দেশগুলোর জোটের মধ্যে সংঘটিত ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধের সময় নিখোঁজ হয়ে যাওয়া পাইলট মেজর শিমন অ্যাশের নাতনী।
‘তারা আর নিরাপদ নন’
ইরানের একটি চ্যানেল জানিয়েছে, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এখন “স্যাটেলাইট ছবি থেকে প্রাপ্ত তথ্য” সংগ্রহ করেছে। এতে ইসরাইলি বিমান বাহিনীর কর্মীদের বসবাসের সঠিক স্থান প্রকাশিত হয়েছে।
একটি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাশের মন্তব্যের উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে তিনি দাবি করেছেন, তিনি ইহুদিবাদীদের “নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিলেন”।
চ্যানেলটির প্রতিবেদনে বলা হয়, “এখন, তিনি নিজেও আর নিরাপদ নন। ইসরায়েলি কর্মীদের তথ্য প্রকাশ “পুরো বিশ্বকে তাদের জন্য অনিরাপদ করে তুলেছে।”
ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদের অবস্থান, তাদের সরঞ্জাম এবং তাদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য হাতে পাওয়ায় “ইরানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি কৌশলগত সুবিধা পাবে। ভবিষ্যতে যদি কোনও প্রতিশোধের প্রয়োজন হয় তখন কাজে লাগবে।
‘প্রতিশোধের নমুনা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে’
প্রতিবেদনগুলিতে আরও স্পষ্ট করা হয়েছে, আরোপিত যুদ্ধের সময় ইরানের প্রতিশোধমূলক অভিযানের সময় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর কিছু কর্মী ইতিমধ্যেই তাদের বাসস্থান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে দেখেছেন।
একটি সম্প্রচার প্রতিবেদনে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কেন্দ্রীয় অংশে অবস্থিত ইয়াভনে শহরে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর কর্মীদের বাসস্থানের উপর এমন একটি প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর পরের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে কিছু বাসস্থান ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনী অধিকৃত অঞ্চল জুড়ে কমপক্ষে ২২ ধাপে পাল্টা আক্রমণ চালায়।
প্রতিশোধের মাধ্যমে ইসরায়েলি পারমাণবিক, সামরিক এবং শিল্প স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ফলে ১২ দিন পরই ইসরায়েলি সরকার যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করে।
ইরানকে নিন্দা করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা
প্রতিবেদনগুলিতে আরও প্রকাশ করা হয়েছে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী কর্মীদের অবস্থান ইরানি পাল্টা হামলার আওতায় আসার পর দেশটির সরকার তাদের স্কুলের মতো জায়গায় স্থানান্তরিত করে।
প্রতিবেদনগুলিতে অবশেষে বলা হয়েছে, উদঘাটনের অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত যা প্রকাশ করা হয়েছে তা কেবল “একটি উদাহরণ”।