হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্.)-এর প্যারিস গমনে ইরানে ও বহির্বিশ্বে প্রতিক্রিয়া
পোস্ট হয়েছে: মার্চ ২৫, ২০১৬
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতা হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্.) অনেকগুলো বছর ইরাকের ধর্মীয় নগরী নাজাফে নির্বাসিত জীবন যাপন করেন। ইসলামী বিপ্লবের বিজয়ের চার মাস আগে যখন ইরাকের একনায়কতান্ত্রিক সরকারের পক্ষ থেকে ইরানের তৎকালীন শাহ্কে খুশি করার উদ্দেশ্যে হযরত ইমামের ওপর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ত্যাগ করে নীরবতা অবলম্বন অথবা ইরাক ত্যাগের যে কোনো একটি পথ বেছে নেয়ার জন্য চাপ দেয়া হয় তখন ইমাম ইরাক ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে তিনি প্রতিবেশী দেশ কুয়েতে যাবার সিদ্ধান্ত নেন এবং এ উদ্দেশ্যে স্থলপথে কুয়েত সীমান্তে পৌঁছেন। কিন্তু কুয়েত সরকার ইরানের শাহ্কে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে তাঁকে কুয়েতে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এমতাবস্থায় ইমাম তাঁর পুত্র আহ্মাদ খোমেইনী ও তাঁর সাথে আগত বন্ধু-বান্ধবদের সাথে পরামর্শক্রমে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে গমনের সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৭৮ সালের ৬ই অক্টোবর বিমানযোগে প্যারিসে উপনীত হন। কিন্তু ইমামের প্যারিস গমন অচিরেই বিজাতীয় ঔপনিবেশিক শক্তিকে এবং ইরানের শাহ্ ও তার সরকারকে আতঙ্কিত করে তোলে।
যদিও ইমামের প্যারিস গমনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর প্রথমে বাহ্যিক দৃষ্টিতে অনেকেরই মনে হয়েছিল যে, ইরানের সাথে দীর্ঘ সীমান্তের অধিকারী প্রতিবেশী দেশ ইরাক থেকে সুদূর প্যারিসে চলে যাওয়ার ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর আহ্বানে সংঘটিত ইরানের ইসলামী জনতার গণ-অভ্যুত্থানের অপমৃত্যু ঘটবে, কিন্তু তিনি প্যারিসে প্রবেশের পর পরই তাঁর গৃহীত পদক্ষেপসমূহের পরিপ্রেক্ষিতে সকলের কাছেই সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, ইমাম খোমেইনী (রহ্.) সেখানে যাবার কারণে ইরানের ইসলামী বিপ্লবকে একটি বৈশ্বিক বিপ্লবে পরিণত করতে পেরেছেনÑ যা তাঁর অপরিসীম প্রজ্ঞার পরিচায়ক। তাই বিভিন্ন বৈদেশিক সরকার ও তৎকালীন ইরানের শাহী সরকার ইমামের প্যারিসে অবস্থানের ব্যাপারে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে।
যেহেতু ইমাম খোমেইনীর ইরাক থেকে প্যারিস গমন ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সমূহের অন্যতম সেহেতু ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলুশন্ ডকুমেন্ট্ সেন্টার (আইআরডিসি) ঐ সময় এ ঘটনায় ইরানের অভ্যন্তরে ও ইরানের বাইরে যেসব প্রতিক্রিয়া হয়েছিল তা সংগ্রহ ও সংকলিত করেছে। এ সবের মধ্য থেকে দৃষ্টান্ত স্বরূপ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রতিক্রিয়া এখানে পরিবেশন করা হচ্ছে :
ইমাম খোমেইনী (রহ্.)-এর প্যারিস যাত্রায় ইরানের অভ্যন্তরে সংঘটিত প্রতিক্রিয়া
ইরাকের একনায়কতান্ত্রিক বাথ পার্টি সরকার সব সময়ই হযরত ইমাম খোমেইনীর ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে আসছিল, আর ইমামের একনিষ্ঠ অনুসারী ইরানের আলেমসমাজ সব সময়ই এসব খবর রাখতেন। তাই তাঁরা যখন তাঁর ইরাক ত্যাগ করে প্যারিসের উদ্দেশে যাত্রার সংবাদ জানতে পারলেন সাথে সাথে তাঁরা ফরাসি সরকারের কাছে অসংখ্য টেলিগ্রাম পাঠিয়ে ইমামকে সাদর অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অনুরোধ জানান। আর এভাবে ইমামের প্যারিস গমন ও ইরানী ওলামায়ে কেরামের টেলিগ্রাম প্রেরণের সংবাদ ইরানী সংবাদপত্র সমূহে ফলাও করে প্রকাশিত হয় ও বিদেশি বার্তা সংস্থাসমূহও তা বিশেষ গুরুত্বের সাথে প্রচার করে। বার্তা সংস্থা এএফপি তার ব্রেকিং নিউজে বলে : ‘আয়াতুল্লাহ্ খোমেইনী গোপনে ও বেশি হৈচৈ না করে প্যারিসে প্রবেশ করেছেন এবং তাঁর বন্ধুদের সাথে একটি অজ্ঞাত স্থানে গিয়েছেন।’
ইরানে এর অনেক আগে থেকেই অনবরত বিক্ষোভ চলছিল। এমতাবস্থায় ইমামের সাথে যে ধরনের আচরণ করা হয় তার প্রতিবাদে নতুন করে প্রতিবাদের বন্যা শুরু হয় এবং বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ধর্মঘট শুরু করে ও অব্যাহত রাখে।
এ সময় তেহরানের ওলামায়ে কেরাম হযরত ইমাম খোমেইনীর প্যারিস গমন সম্পর্কে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে। হযরত আয়াতুল্লাহ্ সাদূক্বী ইমাম বরাবরে একটি টেলিগ্রাম পাঠান। এ টেলিগ্রামে তিনি বলেন যে, ইয়ায্দের ওলামায়ে কেরাম হযরত ইমামের পথনির্দেশ কার্যকর করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছেন।
হযরত আয়াতুল্লাহ্ সাদূক্বী ফরাসি প্রেসিডেন্টের কাছেও একটি পত্র প্রেরণ করেন। এ পত্রে তিনি বলেন : ‘আয়াতুল্লাহ্ খোমেইনী বিশ কোটি শিয়া মুসলমানের নেতা। তাই আশা করি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও ফ্রান্সের মহান জনগণÑযাঁরা গণতন্ত্র ও মুক্তিকে সমর্থন করেনÑতাঁদের এ মহান মেহমানের যথাযথ আতিথেয়তা ও তাঁকে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকবেন না।’
ইমাম খোমেইনীর প্যারিসে অবস্থানে ফরাসি ও ইরান সরকারের প্রতিক্রিয়া
ইমাম খোমেইনী (রহ্.) ফরাসি সরকারকে আগে থেকে কোনো কিছু না জানিয়ে সহসাই তাঁর বন্ধুদের সাথে নিয়ে প্যারিসে গিয়ে হাযির হনÑ যা সেখানে বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। যেহেতু হযরত ইমামের ইরাকে অবস্থানের ফলে ইরাক সরকার খুবই অস্বস্তি বোধ করছিল এবং এ নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে চাচ্ছিল সেহেতু ইমাম খোমেইনী যখন প্যারিসে যাবার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন তখন ইরাক সরকার তাঁকে ও তাঁর বন্ধুদেরকে একটি ইরাকী বিমানযোগে প্যারিসে পাঠিয়ে দেয় এবং বিষয়টি যাতে কেউ জানতে না পারে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে।
ইমাম খোমেইনী প্যারিসে উপনীত হলে ফ্রান্সের ইমিগ্রেশন ব্যুরো ফরাসি সরকারের একটি আনুষ্ঠানিক নির্দেশ ও তদসহ ইরাকের প্রেসিডেন্টের একটি পত্র লাভ করে।
ইরাকের প্রেসিডেন্টের পত্রে বলা হয় : মি. খোমেইনীকে জানানো হয়েছে যে, তাঁর ফ্রান্সে অবস্থানকে স্রেফ একজন পর্যটকের অবস্থান হিসেবে গণ্য করা হবে এবং এর মেয়াদ হবে সীমিত। সুতরাং তাঁর ফ্রান্সে অবস্থানকালে তাঁকে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতা হতে বিরত থাকতে হবে।
প্যারিসে অধ্যয়নরত ইরানী ছাত্ররা যখন জানতে পারল যে, হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্.) প্যারিসে এসেছেন তখন তারা একটি সমাবেশের আয়োজন করল এবং ইমামকে তাতে অংশগ্রহণের জন্য দাওআত করল। জুমু‘আ নামাযের পরে সমাবেশ করা হবে এবং তাতে হযরত ইমাম খোমেইনীর ভাষণের পরে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু ফরাসি সরকারের প্রতিনিধিগণ ইমামের সাথে সাক্ষাৎ করে জানান যে, তিনি এ ধরনের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
ইমাম খোমেইনীর ওপর ফরাসি সরকারের এ কড়াকড়ির সংবাদে তেহরানে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। দৈনিক এত্তেলাআত্ লিখে : ‘ফরাসি সরকার হযরতকে প্যারিসে থাকাকালে রাজনৈতিক তৎপরতা হতে বিরত থাকতে বলেছে।’
এছাড়া দৈনিক কেইহান্ লিখে : ‘তথ্যাভিজ্ঞ সূত্র জানিয়েছে যে, ফরাসি সরকার যদি আয়াতুল্লাহ্র রাজনৈতিক তৎপরতাকে প্রতিহত করে তাহলে তিনি শীঘ্রই ঐ দেশ ত্যাগ করবেন।’
এর পর পরই ইরানের বহু সংখ্যক সুপরিচিত আলেম ও বিভিন্ন সংগঠন ফরাসি সরকারের কাছে টেলিগ্রাম পাঠিয়ে ইমাম খোমেইনী (রহ্.)-এর প্রতি যথোচিত মেহমানদারির পরিচয় দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। এসব টেলিগ্রামের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইরানের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় র্মাজা‘ (ধর্মীয় নেতা) হযরত আয়াতুল্লাহ্ র্মা‘আশী নাজাফীর টেলিগ্রাম।
এ সময় আল্জেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্.)-কে লেখা এক পত্রে বলেন যে, তাঁর দেশ ইমাম খোমেইনীকে নিজেদের মধ্যে পেতে খুবই আগ্রহী।
এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার ওলামায়ে কেরাম হযরত ইমাম খোমেইনীর কাছে একটি টেলিগ্রাম পাঠিয়ে তাঁকে তাঁদের দেশে গিয়ে থাকার জন্য অনুরোধ জানান।
জানা যায় যে, এ পরিস্থিতিতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমাম খোমেইনীকে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করার নির্দেশ সম্বলিত একটি নোটে স্বাক্ষর করেছিলেন, কিন্তু বিষয়টি প্যারিসস্থ ইরান দূতাবাসের মাধ্যমে ইরানের শাহ্কে জানিয়ে তার মতামত জানতে চাওয়া হলে এ ব্যাপারে শাহের সম্মতি না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ফরাসি সরকার তা কার্যকর করা হতে বিরত থাকে। এ ব্যাপারে শাহের সম্মত না হওয়ার পিছনে কারণ ছিল, শাহের ভয় হচ্ছিল, এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হলে ইরানী জনগণের মধ্যে তার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক বিদ্রোহ সংঘটিত হবে। তাই প্যারিসের ইরান দূতাবাসের মাধ্যমে ফরাসি সরকারকে জানানো হয় যে, ইরান সরকার এ ধরনের পদক্ষেপের পক্ষে নয়। ইরান সরকারের এ মেসেজ ফরাসি কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি করে।
এরপর তেহরানস্থ ফরাসি রাষ্ট্রদূত লিখেন : ‘ইরানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জানানো হয় যে, ঐ দেশের (ফ্রান্সের) আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতির আওতায় খোমেইনীর ফ্রান্সে অবস্থানে কোনো সমস্যা নেই। ইরানের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একমাত্র যে অনুরোধ জানানো হয় তা হচ্ছে এই যে, আয়াতুল্লাহ্র তৎপরতা সংক্রান্ত খবরাখবর যেন তাঁকে অবহিত করা হয়। সুতরাং এটাই করা হয়।’
মাহ্মূদ রেযা পাহ্লাভীর অহংবিৎ ঃড় ঐরংঃড়ৎু বইয়ে ইমাম খোমেইনী (রহ্.)-এর ফ্রান্সে অবস্থান সম্পর্কে তার বিরোধিতার কথা উল্লেখের পর বলা হয়েছে : ‘আমি বিশ্বাস করতাম যে, তিনি প্যারিসে থাকা অবস্থায় যেমন তেমনি অন্য কোথাও থাকলেও ধ্বংসাত্মক হতে পারতেন, তা হামবুর্গেই হোক বা যুরিখেই হোক। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনো যৌথ ফ্রন্ট্ গড়ে তোলার মতো ক্ষমতা আমার ছিল না।’
ইমাম খোমেইনীর প্যারিস যাত্রা সম্পর্কে ব্রিটিশ ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য
ইরানে নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মনে করতেন যে, ইরানের তৎকালীন শাহী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শারীফ্ এমামী এ ক্ষেত্রে একটি বড় ভুল করেন যা তাঁর বাস্তবতা সম্পর্কে যথাযথ ধারণার অভাবজনিত ও সুস্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষমতাজনিত অন্যান্য ভুল থেকে অধিকতর গুরুতর ভুল। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি (শারীফ্ এমামী) মনে করতেন যে, যেহেতু ইরাকের ধর্মীয় নগরী নাজাফে ইমাম খোমেইনীর উপস্থিতি ছিল শাহের জন্য ঘাড়ে ব্যথার সমতুল্য সেহেতু তাঁকে যদি ঐ শহর থেকে সরিয়ে দেয়া যায় তাহলে তা ইমাম খোমেইনীর অনুসারীদের পরিকল্পনাকে ভণ্ডুল করে দেবে। তিনি মনে করতেন যে, যেহেতু ইমাম খোমেইনী ইরাকে গমনকারী ইরানী যিয়ারতকারীদের সাথে যোগাযোগ করবেন এবং তাদেরকে স্বীয় টেপ রেকর্ডকৃত বাণী প্রদান করবেন, সেহেতু তাঁকে যদি ঐ এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়া যায় তাহলে তাঁর অনুসারীদের পক্ষে তাঁর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা অপেক্ষাকৃত কম সম্ভব হবে। তাঁর (ইরানী প্রধানমন্ত্রীর) পরিকল্পনাটি যখন বাস্তবায়ন করা হলো এবং আয়াতুল্লাহ্ খোমেইনী প্যারিসের উদ্দেশে ইরাক ত্যাগ করলেন তখন শারীফ্ এমামী আমাকে ও (ইরানে নিযুক্ত তৎকালীন) মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেন : ‘খোমেইনী প্যারিসে পদার্পণ করার সাথে সাথে (ইরানী জনগণের) মস্তিষ্ক সমূহ থেকে মুছে যাবেন।’
ইরানে নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাঁর লিখিত এক গ্রন্থে বলেন : অক্টোবরের শুরুর দিকে শারীফ্ এমামী আমাকে ও আমার ব্রিটিশ সমপক্ষকে আয়াতুল্লাহ্ খোমেইনীর ইরাকের বাইরে চলে যাওয়া সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন যে, প্রকৃতপক্ষে খোমেইনী স্থলপথে দক্ষিণ দিকে কুয়েত অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছেন। তখন শারীফ্ এমামী সম্ভবত মনে করতেন যে, খোমেইনী যদি একবার সেখানে (কুয়েতে) পৌঁছতে পারেন তাহলে যে কোনো মুহূর্তে সহসাই পারস্য উপসাগরের প্রবেশদ্বারের বাইরে বেরিয়ে গিয়ে একটি মোটর বোটে আরোহণ করে ইরানের দিকে অগ্রসর হতে এবং ইরানের উপকূলে অবতরণ করতে সক্ষম হবেন। তখন তিনি (শারীফ্ এমামী) মনে করতেন যে, খোমেইনীকে যদি (কুয়েতে গমন থেকে) বিরত রাখা না যায় তাহলে তিনি (সহজেই ইরানে প্রবেশ করতে ও) স্বাধীনভাবে ইরানের সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে সক্ষম হবেন এবং সরকারের পতন ঘটাবেন।
সূত্র : ইসলামিক রেভ্যুলুশন্ ডকুমেন্ট্ সেন্টার (আইআরডিসি)
অনুবাদ : নূর হোসেন মজিদী