স্মরণীয় বাণী
পোস্ট হয়েছে: এপ্রিল ২৫, ২০১৬
মহানবী (সা.) বলেন : হে আলী! আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় কাজ তিনটি : যে ব্যক্তি আল্লাহ্ কর্তৃক তার ওপর ফরযকৃত কাজগুলো পালন করে সে হলো সবচেয়ে আবেদ লোক, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ কর্তৃক নিষেধকৃত কাজগুলো থেকে বেঁচে চলে সে হলো সবচেয়ে সংযমী লোক। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তার জন্য যে জীবিকা নির্ধারিত করেছেন তাতেই তুষ্ট থাকে, সে হলো সবচেয়ে সামর্থ্যবান লোক।
মহানবী (সা.) বলেন : যে ব্যক্তির সকাল ও সন্ধ্যা অতিবাহিত হয় এ অবস্থায় যে, তার তিনটি জিনিস থাকে, তবে তার ওপর দুনিয়ার নেয়ামত পরিপূর্ণ হয়ে যায়। যার সকাল ও সন্ধ্যা অতিবাহিত হয় সুস্থ অবস্থায়, তার মনে প্রশান্তি থাকে আর তার নিকট একদিনের জীবিকা থাকে। আর যদি চতুর্থ বস্তুটিও তার থাকে তাহলে তার দুনিয়া ও আখেরাতের সকল নেয়ামত পূর্ণ হয়। আর সেটা হলো ঈমান।
মহানবী (সা.) বলেন : যে ব্যক্তি না জেনে জনগণের মধ্যে ফতোয়া প্রদান করে তার ওপরে আসমান ও জমিনের ফেরেশতারা অভিসম্পাত বর্ষণ করেন।
আমীরুল মুমিনীন ইমাম আলী (আ.) বলেন : ধৈর্য দু’ধরনের : বিপদে ধৈর্যধারণ- যা সুন্দর বটে। আর এর চেয়ে উত্তম হলো হারাম কাজ বর্জনে ধৈর্যধারণ। আর যিকির দু’ধরনের : বিপদের সময় যিকির করা- যা ভালো এবং প্রশংসনীয়। আর তার চেয়ে উত্তম হলো হারাম কাজের সম্মুখে আল্লাহর যিকির তথা স্মরণ করা যাতে তা থেকে বিরত থাকে।
আলী (আ.) বলেন : ইমাম সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে আল্লাহর আনুগত্যের উদ্দেশ্যে লোকদের সাথে বন্ধুত্ব করবে আর লোকেরা তার সাথে বন্ধুত্ব করবে।
ইমাম হাসান (আ.) তাঁর এক পুত্রকে বলেন : প্রিয় বৎস! কোনো লোকের সাথেই ভ্রাতৃত্ব কর না যতক্ষণ না জানবে যে, সে কোথায় কোথায় যাওয়া আসা করে, আর তার বংশ পরিচয় ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কী। যখন তার অবস্থা সম্পর্কে ভালোভাবে জানবে এবং তার আচরণ পছন্দ করবে তখন তার সাথে ভ্রাতৃত্ব কর একটি শর্তে। তা হলো যেন ভুলত্রুটিকে ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখে আর দুর্দিনে পাশে থাকে।
ইমাম হোসাইন (আ.) বলেন : যেন এমন কাজ কর না যার জন্য ক্ষমা চাইতে হয়। কারণ, মুমিন ব্যক্তি অকাজ করে না, ক্ষমাও চায় না। আর মুনাফিক প্রত্যেক দিন খারাপ কাজ করে এবং ক্ষমা চায়।
ইমাম হোসাইন (আ.) বলেন : আমি তোমাদেরকে আল্লাহকে ভয় করে চলার উপদেশ দিচ্ছি। কারণ, যে ব্যক্তি তাকওয়াবান হয় আল্লাহ তাঁর জন্য জামিনদার হন; তার খারাপ অবস্থা থেকে তাকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যাবেন এবং যে পথ দিয়ে সে ধারণাও করেনি সেখান থেকে তার রুজির ব্যবস্থা করবেন। আর এমন না হয় যে, তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে যে আল্লাহর অন্যান্য বান্দার পাপে উৎকণ্ঠিত থাকবে, অথচ নিজের পাপ থেকে নির্ভাবনায় থাকবে। কারণ,আল্লাহ তাঁর বেহেশতের ব্যাপারে ধোঁকার শিকার হবেন না। আর তাঁর নিকটে যা আছে সেটা আনুগত্য ব্যতীত অর্জন করা যায় না।
ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : আল্লাহর সবচেয়ে বড় অধিকার হলো তাঁকে ইবাদত করবে এবং কোনো কিছুকেই তাঁর অংশীদার বলে মানবে না। যদি নিষ্ঠার সাথে একাজ কর তাহলে আল্লাহ নিজ দায়িত্বে তুলে নিয়েছেন যে, তোমার দুনিয়া ও পরকালের কাজের জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। আর তুমি তাঁর নিকট থেকে যা চাইবে সেটা তোমার জন্য সংরক্ষিত রাখবেন।
ইমাম মূসা আল কাযেম (আ.) বলেন : উত্তম প্রতিবেশিত্ব কেবল কষ্ট না দেয়া নয়; বরং উত্তম প্রতিবেশিত্ব হলো প্রতিবেশী কষ্ট দিলে ধৈর্যধারণ করা।
ইমাম মূসা আল কাযেম (আ.) বলেন : তোমার ও তোমার ভাইয়ের মধ্যে সবকিছুই (প্রকাশ্য ও গোপনীয় বিষয়) একাকার করে ফেল না। পর্দা বজায় রাখ। কারণ, তা না থাকলে লজ্জা চলে যায়।
ইমাম কাযেম (আ.) বলেন : লোকেরা যতই নতুন নতুন গোনাহ করে, যা আগে করত না, আল্লাহ্ও নতুন নতুন বিপদ তাদেরকে দেন যা তারা চিন্তাই করত না।
ইমাম আলী ইবনে মূসা আর রেযা (আ.) বলেন : ইমাম হলেন আল্লাহর ও তাঁর সৃষ্টির মাঝে তাঁর আমানতদার (বিশ্বস্ত রক্ষক)। আর তাঁর বান্দাদের ওপরে তাঁর হুজ্জাত এবং তাঁর দেশে দেশে তাঁরই খলীফা এবং আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী আর আল্লাহর (দীনের) সীমার প্রতিরক্ষাকারী। ইমাম গোনাহ থেকে পবিত্র এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে মুক্ত, জ্ঞানে বিশেষায়িত ও সহিষ্ণুতায় খ্যাত; দীনের শৃঙ্খলাবিধায়ক, মুসলমানদের সম্মান প্রতিষ্ঠাকারী, মুনাফিকদের ক্রোধের কারণ, আর কাফেরদের ধ্বংসকারী।