মঙ্গলবার, ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

English

মস্তিষ্কে ইমপ্ল্যান্ট বসানোয় শীর্ষ ২৫ দেশের তালিকায় ইরান

পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ২৮, ২০১৭ 

news-image

মানুষের মস্তিষ্কে ইমপ্ল্যান্ট বসানোর ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি হয়েছে বিজ্ঞানীদের। বেশ কয়েক বছর ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরাই এটা নিয়ে সক্রিয়ভাবে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। বিশ্বে মস্তিষ্কে ইমপ্ল্যান্ট বসানো নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে শীর্ষ ২৫ দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে দেশটি।

বুধবার ইরানের সাইন্স অ্যান্ড কগনিটিভ টেকনোলজিস কাউন্সিলের একজন পরিচালক এই তথ্য জানিয়েছেন।

মূলত মস্তিষ্কে আঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনরায় সচল করতেই ব্রেইনে ইমপ্ল্যান্ট বসানো নিয়ে কাজ করছেন গবেষকরা। এ ক্ষেত্রে তাদের সহায়তায় চিপ নকশা করা হবে। যা বসানো হবে মাথার খুলির মধ্যে। প্রতিস্থাপিত এসব চিপ মানুষের অনুভূতিকে চাঙ্গা করবে। ফলে টার্গেটকৃত অঙ্গের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবে রোগী।

সাইন্স অ্যান্ড কগনিটিভ টেকনোলজিস কাউন্সিলের ইমপ্ল্যান্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রধান হোসেইন মাঘামির ভাষ্যমতে, গত দশকে বিশ্বে বৈজ্ঞানিক উৎপাদনে বর্তমানে ইরানের দশমিক ৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে। বৈশ্বিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ব্রেইন ইমপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখ্যযোগ্য রেকর্ডসহ ২৫টি সেরা দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে দেশটি।

তিনি জানান, ব্রেইন ইমপ্ল্যান্ট সিস্টেম হচ্ছে বিভিন্ন অংশের সমন্বয়ে গঠিত একটি পদ্ধতি। যেখানে মস্তিষ্কে ডিভাইস বসানো হয়। এ ডিভাইস স্নায়বিক সংকেত গ্রহণ করতে পারে অথবা স্নায়ুসংক্রান্ত কোষগুলো চাঙ্গা করতে পারে। ব্রেইনের উপরিভাগের সঙ্গে এসব অংশ যোগাযোগ রক্ষা করে। এর মাধ্যমে সেগুলো স্নায়বিক সংকেত গ্রহণ করে এবং তা মস্তিষ্কের বাইরে পাঠিয়ে দেয়।

গভীর মস্তিষ্কে উদ্দীপনা সৃষ্টির এই প্রযুক্তিকে ডিবিএস বলা হয়। এই প্রযুক্তি পারকিনসনের মতো স্নায়বিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এই রোগ মস্তিষ্কের এমন এক অবস্থা যাতে হাতে ও পায়ে কাঁপুনি হয় এবং আক্রান্ত রোগী চলাফেরায় অপারগ হয়। এ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে রোগী পুনরায় শরীরে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

ডিবিএস পদ্ধতিতে ইলেক্ট্রোড এবং ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এসব লেক্ট্রোড এবং ব্যাটারি উৎপাদনের প্রকল্পে ইরানের সাইন্স অ্যান্ড কগনিটিভ টেকনোলজিস কাউন্সিল বর্তমানে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান ইমপ্ল্যান্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রধান হোসেইন মাঘামি।

উল্লেখ্য, এর আগে গবেষকরা প্রথমবারের মতো পুরোপুরি পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক রোগীর মস্তিষ্কে ইমপ্ল্যান্ট বসানোর মাধ্যমে তার মধ্যে অনুভূতিমূলক উন্নতি লক্ষ্য করেন এবং হাতের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনতে সফল হন। এর ফলে ওই রোগী এখন রোবোটিক বাহু নাড়াতে পারছেন।

বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী সায়েন্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এরিক সর্টো নামে ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মস্তিষ্কে বিশ্বের প্রথম সফল নিউরাল প্রসেথিক সার্জারি সম্পন্ন হয়। তিনি এখন রোবোটিক বাহু দিয়ে করমর্দন, পানির কাপ ধরা, কাগজপত্র ও টুকটাক জিনিস নড়াচড়া করতে পারছেন। ডিভাইস তার মস্তিষ্কের এমন স্থানে বসানো হয়েছে যেখানে থেকে ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। ইতোপূর্বে এ ধরনের অস্ত্রোপচারে ডিভাইস মস্তিষ্কের এমনস্থানে বসানো হয় যেখানে থেকে নিয়ন্ত্রিত হয় দেহের গতি। মস্তিষ্কের কর্টেক্সের নির্দিষ্ট দুই সেট মাইক্রো ইলেকট্রোড বসিয়ে অনুভূতি চাঙ্গা করা হয়। সূত্র: মেহর নিউজ।