কোষ থেরাপিতে ইরান বিশ্বে অষ্টম
পোস্ট হয়েছে: আগস্ট ১১, ২০২৫

ইরান স্টেম সেল এবং কোষ থেরাপির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। দেশটি আগের বছরের ১২তম স্থান থেকে বিশ্বে ৮তম স্থানে উন্নীত হয়েছে।
ইরানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্সির কর্মকর্তা মোস্তফা কানেই জানান, ‘গত বছর আমাদের বাজারে মাত্র একটি কোষ থেরাপি পণ্য ছিল এবং ইরান বিশ্বে ১২তম স্থানে ছিল। কিন্তু এই বছর আমরা ৫টি পণ্য নিয়ে বিশ্বে অষ্টম স্থানে পৌঁছেছি।’
স্বাস্থ্য খাতের অর্জনের উপর আলোকপাত করে রোববার তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
‘‘আমাদের লক্ষ্য এই ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে থাকা এবং রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা দূর করা,’’ আরও বলেন তিনি।
স্বাস্থ্য খাতে প্রযুক্তিগত প্রকল্প
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্সির কর্মকর্তা সাইদ সরকার আরও বলেন, ইরানের চলতি বছরে স্বাস্থ্য খাতের সাথে সম্পর্কিত বিশটি প্রযুক্তিগত প্রকল্প এজেন্ডায় রয়েছে। এসব প্রকল্প শেষ হবে ২০২৬ সালের মার্চ মাসে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আইআরআইবি সাইদ সরকারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (এসএমএ) ওষুধ উৎপাদন, পাচক ক্যান্সারের জন্য প্রাথমিক সনাক্তকরণ কিট তৈরি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য-ভিত্তিক পণ্য তৈরি। গৃহীত এসব প্রকল্পে ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ওষুধি উদ্ভিদের কথা উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা দুটি প্রধান লক্ষ্য অর্জন করছি, প্রথমটি হল ন্যানো প্রযুক্তির মতো প্রযুক্তির মাধ্যমে ওষুধি উদ্ভিদের কার্যকারিতা উন্নত করা। উদাহরণস্বরূপ, শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কারকিউমিনযুক্ত ন্যানোক্যাপসুল।
দ্বিতীয় লক্ষ্য হল- ঐতিহ্যবাহী ওষুধের প্রভাব নথিভুক্ত করার জন্য ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করা এবং ফলাফল যাচাইয়ের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে উপস্থাপন করা।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে সরকার বলেন, “আমরা রেডিওলজি এবং প্যাথলজির মতো খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সরঞ্জাম স্থাপন করছি। এই ডিভাইসগুলি চিকিৎসা রোগ নির্ণয়ে পরিপূরক ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি নির্ভুলতা উন্নত করতে, খরচ কমাতে এবং স্বাস্থ্যসেবায় জনসাধারণের প্রবেশাধিকার উন্নত করতে সাহায্য করবে।”
স্বাস্থ্যসেবা খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির অভূতপূর্ব সম্ভাবনা তুলে ধরে ইরানি এই কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ব্যয় এবং ঝুঁকি হ্রাস করার পাশাপাশি ক্লিনিকাল সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্ভুলতা এবং গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।
ফেব্রুয়ারীতে, বার্তা সংস্থা ইরনা খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের পরিচালক মেহেদী পিরসালেহির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছিল, ইরান এফডিএ-এর অনুমোদন প্রাপ্ত কোষ থেরাপি পণ্য তৈরিতে সফল হয়েছে।
‘‘কিছু জিন থেরাপি পণ্য ক্লিনিকাল ট্রায়াল পর্যায়েও রয়েছে,’’ আরও যোগ করেন তিনি।
ওষুধ খাতে দেশের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এবং ইরানি বিজ্ঞানীদের দক্ষতার কথা উল্লেখ করে কর্মকর্তা আধুনিক কৌশল বিকাশ এবং ওষুধ শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
‘‘দেশীয় বাজারে সরবরাহ করা প্রায় ৯৯ শতাংশ ওষুধ ইরানি জ্ঞান-ভিত্তিক কোম্পানিগুলি দ্বারা উৎপাদিত হয়। তারা দেশের চাহিদা পূরণের জন্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে জৈবপ্রযুক্তি পণ্য তৈরিতেও সফল হয়েছে,’’ বলেন পিরসালেহি।
স্বাস্থ্যসেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংহতকরণ
এপ্রিল মাসে কানেই বলেছিলেন, স্বাস্থ্য খাতে বিজ্ঞান ও জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতির জন্য ভাইস-প্রেসিডেন্সির অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হল স্বাস্থ্যসেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে একীভূত করা যাতে চিকিৎসার খরচ চল্লিশ শতাংশ কমানো যায়।
স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে একীভূত করার জন্য একটি সঠিক রোডম্যাপ এবং একটি ব্যাপক পদ্ধতির প্রয়োজন। কর্মকর্তা আরও বলেন, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য এই ক্ষেত্রে কর্মরত বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন উপায়ে সহায়তা করা হবে। তেহরান টাইমস