কেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইরানের পরিবহন খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে?
পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ১৩, ২০২৫

উপযুক্ত অবকাঠামো ও কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ইরানের পরিবহন খাত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ইউরোপ, মধ্য এশিয়া ও পশ্চিম এশিয়ার সংযোগস্থলে ইরানের অবস্থান- যা দেশটিকে অবকাঠামো ও পরিবহন খাতে বিনিয়োগের অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্রে পরিণত করেছে।
পার্সটুডে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ১৫টি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্তি এবং “নতুন সিল্ক রোড” বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক করিডোরের মাঝপথে অবস্থান হওয়ায় ইরানকে পরিবহন অবকাঠামো উন্নয়নের এক অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান ইতোমধ্যেই এক হাজার কোটি ডলারেরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে, যা বন্দর, রেলপথ ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইউরোপ ও এশিয়ার বিনিয়োগকারীদের জন্য এই সুযোগটি বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, কারণ ইরানের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার (প্রায় ৯ কোটি জনসংখ্যা) এবং ৪০ কোটির বেশি জনসংখ্যার আঞ্চলিক বাজারে প্রবেশাধিকার রয়েছে।
বর্তমানে ইরানে বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বন্দর উন্নয়ন। চবাহার বন্দরটি মধ্য এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে প্রবেশের দ্বার হিসেবে পরিচিত এবং সম্প্রতি ভারত ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট হাবে পরিণত হয়েছে।
এই বন্দর সমুদ্রপথে লজিস্টিক ও কন্টেইনার টার্মিনাল উন্নয়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি, দক্ষিণের বন্দর আব্বাস ও উত্তরের আনজালি বন্দর ইউরোপ ও ককেশাস অঞ্চলে রপ্তানির প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করছে।
এই বন্দরগুলোর মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলগুলোতে ২০ বছরের করমুক্ত সুবিধা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০ শতাংশ মালিকানা দেওয়া হয়।
রেলপথ খাতেও ইরানের সম্ভাবনা অনেক। দেশটি বর্তমানে উত্তর–দক্ষিণ ও পূর্ব–পশ্চিম করিডোরের সঙ্গে সংযুক্ত রেল নেটওয়ার্ক সম্পন্ন করছে, যা চীন, ভারত ও ইউরোপকে সংযুক্ত করবে।
দ্রুতগতির তেহরান–মাশহাদ রেললাইন এবং ইরাকের সঙ্গে রেল সংযোগের মতো প্রকল্পগুলো বিদেশি প্রকৌশল ও নির্মাণ কোম্পানিগুলোর জন্য বড় সুযোগ তৈরি করেছে। এসব প্রকল্প ইরান সরকারের সমর্থন এবং বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহ আইন অনুযায়ী বিনিয়োগ ফেরতের নিশ্চয়তা পাচ্ছে।
এছাড়া, ইরানের মহাসড়ক ও সড়ক নেটওয়ার্কও দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনকে আরও সহজ করবে। ইরানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্বের সুযোগ এবং সরকারি প্রণোদনা বিনিয়োগ ক্ষেত্রে ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে দিচ্ছে।#
পার্সটুডে