আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইরানের ‘নাহিদ-২’ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সংক্রান্ত খবরের ব্যাপক প্রচার
পোস্ট হয়েছে: জুলাই ২৮, ২০২৫

রাশিয়ান সয়ুজ রকেটে করে ইরানের “নাহিদ-২” উপগ্রহের উৎক্ষেপণ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। (ফার্সি নাহিদ শব্দের অর্থ শুক্র বা জোহরা গ্রহ যা পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের গ্রহ)
শুক্রবার (২৫ জুলাই, ২০২৫) ভোস্টোচনি স্পেস সেন্টার থেকে রাশিয়ান সয়ুজ লঞ্চার ব্যবহার করে ইরানি উপগ্রহ “নাহিদ ২” মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়।
পার্স টুডে এক রিপোর্টে জানিয়েছে, ইউরোনিউজ ইরানি উপগ্রহ “নাহিদ ২” উৎক্ষেপণকে একটি সাফল্য এবং ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের লক্ষণ বলে উল্লেখ করেছে।
পাকিস্তানের ডন নিউজও এ উৎক্ষেপণকে ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান মহাকাশ সহযোগিতার প্রমাণ বলে বর্ণনা করেছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের মতে, ইরানি উপগ্রহ “নাহিদ ২” হল একটি যোগাযোগ উপগ্রহ যার কার্যক্ষম জীবনকাল দুই বছর।
আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কও এই অগ্রগতিকে ইরানি প্রকৌশলীদের সর্বশেষ অর্জন বলে উল্লেখ করেছে।
একটি ভারতীয় নেটওয়ার্ক এই মিশনটিকে রাশিয়ার বহু-উপগ্রহ-ভিত্তিক কর্মসূচির অংশ হিসাবে বর্ণনা করেছে যার লক্ষ্য পৃথিবীর কক্ষপথে বৈজ্ঞানিক, গবেষণা এবং বাণিজ্যিক উপগ্রহ স্থাপন করা।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া পশ্চিমাদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেছে: “পশ্চিমা দেশগুলি দাবি করে যে ইরানের মহাকাশ প্রচেষ্টা একটি ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি তৈরির লক্ষ্যে, যেখানে তেহরান জোর দিয়ে বলে যে এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক!”
চীনা সংবাদমাধ্যম ‘সাংহাই আই’ বলেছে যে ইরানি উপগ্রহ “নাহিদ ২” যে ঘাঁটি থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল তা রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থার তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং বেসামরিক উৎক্ষেপণের জন্য তা ব্যবহার করা হয়; আর এটি সেইসব বিষয়ের অন্যতম যেসব বিষয় নিয়ে পশ্চিমারা উদ্বিগ্ন।
ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইরানি উপগ্রহ “নাহিদ ২” উৎক্ষেপণকে ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্কের লক্ষণ বলে উল্লেখ করেছে।
আমেরিকান নিউজউইক এই ঘটনাকে ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে গভীর কৌশলগত সহযোগিতার প্রতীক বলে বর্ণনা করেছে।একইসঙ্গে এ বিষয়টিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলির জন্য উদ্বেগের কারণ বলেও বর্ণনা করেছে। আর এই উদ্বেগ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলির অকার্যকরতার কারণেই দেখা দিয়েছে বলে নিউজউইক উল্লেখ করেছে। নিউজউইক আরও বলেছে, এই উৎক্ষেপণ রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে প্রযুক্তিগত সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষণ, উভয় দেশের ওপর ক্রমবর্ধমান পশ্চিমা চাপ সত্ত্বেও তা ঘটেছে এবং অন্যদিকে তা স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে ইরানের অব্যাহত অগ্রগতির প্রতিফলন; এই অর্জনের মাধ্যমে ইরান কেবল তার সক্ষমতা বৃদ্ধি করেনি একইসঙ্গে একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তাও পাঠিয়েছে।
টাইমস অফ ইসরায়েল রাশিয়ান মহাকাশ ঘাঁটি থেকে ইরানি উপগ্রহ “নাহিদ ২” এর সফল উৎক্ষেপণে অসন্তোষ প্রকাশ করে রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে একটি কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করেছে এবং এটাও মনে করিয়ে দিয়েছে যে রাশিয়া ইরানের ওপর ইসরায়েলি ও আমেরিকান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
পার্সটুডে/