স্মরণীয় বাণী
এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর পানের জন্য দুধ ও মধু নিয়ে আসলে তিনি বললেন : দু’টি পানীয় রয়েছে। এ দু’টি থেকে একটিই যথেষ্ট। আমি একটি পান করব না, নিষিদ্ধও করব না। কিন্তু আল্লাহ্র জন্য বিনয়ী হব। কারণ, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ্ তাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেন। আর যে অহংকার করে, আল্লাহ্ তাকে অপদস্থ করেন। আর যে ব্যক্তি জীবনে মধ্যপন্থা অবলম্বন করে, আল্লাহ্ তাকে রুজি দান করেন। আর যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করে আল্লাহ্ তাকে বঞ্চিত করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে বেশি বেশি যিকর (স্মরণ) করে আল্লাহ্ তাকে পুরস্কার দান করেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন : কাল কিয়ামতের মাঠে তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে সত্যবাদী, সর্বোত্তম আমানত রক্ষাকারী, সবচেয়ে বিশ্বস্ত, সবচেয়ে চরিত্রবান (সদাচারী) আর মানুষের অধিকতর নিকটবর্তী।
ইমাম রেযা (আ.) বলেন : নীরবতা হলো প্রজ্ঞার দরজাসমূহের মধ্যে একটি দরজা। নিশ্চয় নীরবতা বন্ধুত্ব আনে এবং নিশ্চয় তা সকল কল্যাণের নির্দেশক।
ইমাম রেযা (আ.)-কে প্রশ্ন করা হয় : নীচ কে? ইমাম বললেন : যে ব্যক্তির এমন কিছু রয়েছে যা তাকে আল্লাহর (স্মরণ) থেকে বিরত রাখে।
ইমাম রেযা (আ.) বলেন : আল্লাহর বেশি কথা বলা, সম্পদ বিনষ্ট করা ও বেশি কামনা করাকে ঘৃণা করেন।
ইমাম রেযা (আ.)-কে আল্লাহর সর্বোত্তম বান্দাদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বললেন : এরা হলো তারাই, যারা যখনই সৎকাজ করে তখন প্রসন্ন হয় এবং যখনই মন্দ কাজ করে তখন ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং যখন দানপ্রাপ্ত হয় তখন কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। আর যখন বিপদের সম্মুখীন হয় তখন ধৈর্যধারণ করে এবং যখনই রাগান্বিত হয় তখন ক্ষমা করে দেয়।
তাওয়াক্কুলের পরিসীমা সম্পর্কে ইমাম রেযা (আ.)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়। ইমাম (আ.) বললেন : তাওয়াক্কুল হলো আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করবে না।
বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আলী তাকী (আ.)-এর জন্য কেউ বহুমূল্যবান একটি কাপড়ের পণ্যের বোঝা আনছিল। পথিমধ্যে তা ছিনতাই হয়ে যায়। যে বহন করে আনছিল সে এ খবরটি জানালো। তখন (ইমাম) স্বীয় দস্তখতে লিখলেন : আমাদের জান ও মালামাল আল্লাহর নিখাদ অনুদান এবং তাঁর আমানত ও সোপর্দকৃত। যতদিন তা থেকে উপকৃত হব আমাদের খুশি ও আনন্দের কারণ। আর তা থেকে যা চুরি করে নিয়ে যায় তার বাবদও পুরস্কার ও সওয়াব রয়েছে। কাজেই যার হাহুতাশ তার ধৈর্যের ওপরে চেপে বসে তার পুরস্কার বিনষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহর কাছে তা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।
ইমাম তাকী (আ.) বলেন : কোনো জিনিস মজবুত হওয়ার আগে প্রকাশ করা তা ধ্বংসের কারণ হয়।
ইমাম তাকী (আ.) বলেন : মুমিনের প্রয়োজন আল্লাহর পক্ষ থেকে তৌফিক, নিজের থেকে উপদেশ আর কেউ উপদেশ দিলে তা গ্রহণ করা।
(তুহাফুল উকূল থেকে সংকলিত)
অনুবাদ : আব্দুল কুদ্দুস বাদশা