স্মরণীয় বাণী
পোস্ট হয়েছে: জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
মহানবী (সা.) বলেন : জ্ঞানকে জনগণের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া যায় না, কিন্তু যতক্ষণ অবধি জ্ঞানীরা থাকে ততক্ষণ জ্ঞানীদের অপহরণ করা হয়। ফলে আর কোনো জ্ঞানী অবশিষ্ট থাকে না আর তখন জনগণ মূর্খদেরকেই নেতা হিসেবে গ্রহণ করে; (তাদের কাছে) ফতোয়া চাওয়া হয় আর তারা না জেনে ফতোয়া প্রদান করে। ফলে নিজেরাও পথভ্রষ্ট থাকে আর অন্যদেরও পথভ্রষ্ট করে।
মহানবী (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো : মানুষের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি কঠিনতর পরীক্ষার সম্মুখীন? উত্তরে তিনি বললেন : নবীগণ, অতঃপর সত্যপথে তাঁদের অনুরূপ ও সদৃশতমগণ। আর মুমিন তার ঈমানের মাত্রা অনুযায়ী এবং সৎকর্মের পরিমাণ অনুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। যখন তার ঈমান সঠিক এবং কর্ম সৎ হবে তখন তার পরীক্ষাও কঠিনতর হবে। আর যার ঈমান নিকৃষ্ট আর কর্ম দুর্বল হবে তার পরীক্ষাও কম হবে।
মহানবী (সা.) বলেন : জ্ঞানীদের কাছে প্রশ্ন কর আর হাকিমদের (প্রজ্ঞাবানদের) সাথে সংলাপ কর আর দরিদ্রদের সাথে ওঠাবসা কর।
মহানবী (সা.) বলেন : আল্লাহ্ ঐ বান্দাকে অনুগ্রহ করেন যে হয় উত্তম কথা বলে এবং লাভবান হয়, অথবা মন্দ (কথা বলা) থেকে নীরব থাকে, ফলে নিরাপদ থাকে।
মহানবী (সা.) বলেন : ধীরতা আল্লাহ্র থেকে আর তাড়াহুড়া শয়তানের থেকে।
মহানবী (সা.) বলেন : নামাযের অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করা নামাযের বাইরে কোরআন তেলাওয়াতের চেয়ে উত্তম। আল্লাহ্র যিক্র সাদাকার চেয়ে উত্তম। আর সাদাকা রোযার চেয়ে উত্তম। আর রোযা হলো ভালো কাজ। অতঃপর তিনি বলেন : কাজ ব্যতীত কোনো কথা নেই। আর কোনো কথা ও কাজ নেই নিয়্যত ছাড়া। আর কোনো কথা, কাজ এবং নিয়্যতই নেই সঠিক পন্থা (দীন বিধান মোতাবেক) ছাড়া।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : … দুর্বলেরা যখন তোমার কাছে এমন কিছুর প্রত্যাশা করে যা তাকে দেবার মতো অবস্থা ও ক্ষমতা তোমার না থাকে, তবে এক্ষেত্রে (অন্যদের কাছে) তোমার সম্মান ও মর্যাদাকে তার অভাব পূরণে কাজে লাগাও। এভাবে তাদেরকে টিকে থাকতে সাহায্য কর। আর যা কিছু তোমার থেকে গোপন রয়েছে তা বেশি অনুসন্ধান করতে যেও না। কারণ, তাতে তোমার থেকে আরো বেশি গোপন ও অজ্ঞাত হয়ে পড়বে। নিজেকে মিথ্যা থেকে দূরে রাখবে। কেননা, এটা হলো চরিত্রের নিকৃষ্টতম স্তর এবং এক প্রকার গালি এবং এক ধরনের নীচতা। আর মূল্যহীন ও তুচ্ছ বিষয়ে নাকগলানো থেকে বিরত থেকে নিজেকে সম্মানিত কর।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : নিশ্চুপ থাকা প্রজ্ঞার পরিচায়ক। নীরবতাই নিরাপত্তা আর গোপনীয়তা রক্ষা করা সৌভাগ্যের একাংশ।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : আল্লাহ্্র বান্দা কখনোই ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করবে না যতক্ষণ না মিথ্যাকে ঠাট্টার বশে হোক আর সত্যি সত্যিই হোক পরিত্যাগ করবে।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : …হে লোকসকল! তোমরা যদি দুনিয়াকে পরকালের ওপরে প্রাধান্য দান কর তাহলে নিকৃষ্ট পণ্যের প্রতি তড়িঘড়ি সাড়া দিয়েছ এবং আশার পাগলা ঘোড়াকে অসীমের দিকে বেপরোয়া চালিয়েছ। পরিণামে তা তোমাদের জন্য অনুশোচনা বয়ে আনবে এবং অতীতের উম্মতসমূহ ও বিগত শতাব্দীসমূহে যেসব অবস্থার পরিবর্তন ও শিক্ষণীয় ঘটনাবলির উদ্ভব ঘটেছে তা তোমাদেরকে আস্বাদন করাবে।
ইমাম আলী ইবনুল হোসাইন যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : সৎকর্মপরায়ণদের সাথে ওঠাবসা ভালো কাজের আহ্বায়ক। আর শিষ্টাচার জ্ঞানীদের বুদ্ধি বাড়িয়ে দেয়। আর ওয়ালীয়ে আম্র (বৈধ কর্তৃত্বশীল)-এর আনুগত্য করা পূর্ণ সম্মানের কারণ। আর (সমাজের কল্যাণে) সম্পদের বৃদ্ধি সাধন হলো পৌরুষের পূর্ণতা। আর পরামর্শ প্রার্থীকে নির্দেশনা প্রদান হলো নেয়ামতের হক আদায় করা। আর কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা হলো পূর্ণ বুদ্ধিমত্তা। এর মধ্যেই রয়েছে দুনিয়া ও পরকালের দৈহিক স্বস্তি।
(তুহাফুল উকূল থেকে সংকলিত)
অনুবাদ : আব্দুল কুদ্দুস বাদশা