বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

স্মরণীয় বাণী

পোস্ট হয়েছে: জানুয়ারি ১৫, ২০১৮ 

 

মহানবী (সা.) বলেন : আল্লাহ্র কসম! এমন কোনো কাজই নেই যা তোমাদেরকে জাহান্নামের নিকটবর্তী করে আর আমি তোমাদের সে ব্যাপারে অবগত করি নি কিংবা তোমাদের তা থেকে বারণ করি নি। অপরদিকে এমন কোনো কাজই নেই যা তোমাদেরকে বেহেশতের নিকটবর্তী করে আর আমি তোমাদের সে ব্যাপারে অবগত করি নি কিংবা তার আদেশ করি নি।
মহানবী (সা.) বলেন : আমার নিকট জ্ঞানের মর্যাদা ইবাদতের মর্যাদার চেয়ে অধিক প্রিয়। তোমাদের সবচেয়ে বড় ধর্ম হলো পরহেজগারিতা (আত্মসংযম)।
মহানবী (সা.) বলেন : যে ব্যক্তি নিজেকে নিঃস্ব হিসাবে প্রকাশ করে সে অভাবগ্রস্ত হয়।
মহানবী (সা.) বলেন : নিশ্চয় আল্লাহ্ ঘৃণা করেন বৃদ্ধ ব্যভিচারীকে এবং বিত্তবান অত্যাচারীকে এবং অহংকারী গরীবকে এবং নাছোড়বান্দা ভিক্ষুককে। আর নিষ্ফল করেন প্রচার করে বেড়ানো দানশীলদের পুরস্কারকে আর ঘৃণা করেন এমন ফূর্তিবাজকে যে বেপরোয়া ও মিথ্যাচারী।
মহানবী (সা.) মসজিদুল খিফ-এ দাঁড়ালেন এবং বললেন : আল্লাহ্ প্রফুল্ল করেন সেই বান্দাকে যে আমার কথা শ্রবণ করে অতঃপর স্মৃতিতে ধরে রাখে এবং যে শ্রবণ করে নি তার কাছে পৌঁছে দেয়। কত জ্ঞানপ্রচারকারীর চেয়ে ঐ ব্যক্তি অধিক ব্যুৎপত্তিসম্পন্ন যার নিকট সে জ্ঞানকে পেঁৗঁছায়। কত জ্ঞানের বাহক রয়েছে যে আদৌ জ্ঞানী নয়।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : আল্লাহ্্র কিছু বান্দা রয়েছে যারা নিষ্ঠাপূর্ণ অন্তরে তাঁর সাথে আচরণ করেছে এবং আল্লাহ্্ যথাযথই তাদেরকে মূল্যায়ন করেছেন। কিয়ামতের দিনে তাদের হিসাবের খাতা নিখুঁত এবং যখন তারা তাঁর সামনে দাঁড়াবে, তখন তাদের আমলনামা পরিপূর্ণ থাকবে সেসব রহস্য দিয়ে, যা তার নিকট গোপন ছিল।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : তোমাদের চরিত্রকে ভালোসমূহের প্রতি নত কর এবং মহত্ত্বের দিকে পরিচালিত কর এবং নিজেকে সহিষ্ণুতায় অভ্যস্ত কর এবং অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্য দানে স্বীয় প্রবৃত্তিকে অভ্যস্ত কর তার মাধ্যমে যা তোমাদের প্রশংসিত হওয়ার উপকরণ। আর মানুষের বেশি ছিদ্রান্বেষণ করতে যেও না। আর নীচ কাজসমূহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে নিজেকে ঊর্ধ্বে তুলে ধর।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : পুরুষের পৌরুষ ও ব্যক্তিত্ব ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ হয় না যতক্ষণ না দীনকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়, জীবনে মধ্যপন্থা অবলম্বন করে আর বিপদের সময় ধৈর্যধারণ করে এবং বন্ধুর থেকে তিতা আচরণকে মিঠা বলে জানে।
ইমাম আলী (আ.) বলেন : হে আল্লাহ্্র বান্দাগণ! জেনে রাখ, তাকওয়া হলো মজবুত দুর্গস্বরূপ। আর অনাচার হলো নাজুক দুর্গ যা তার বাসিন্দাদের বাঁচাতে পারে না এবং নিজ আশ্রিতদের রক্ষা করতে পারে না। জেনে রেখ, তাকওয়া দ্বারা বিচ্যুতিসমূহের বিষাক্ত হুল উপড়ে যায় এবং আল্লাহ্্র আনুগত্যের পথে ধৈর্য দ্বারা সওয়াব অর্জিত হয়। আর নিশ্চিত বিশ্বাস দ্বারা পরম কাক্সিক্ষতকে লাভ করা যায়।
ইমাম হোসাইন (আ.) বলেন : তোমরা সুস্থ শরীরে তোমাদের আয়ুষ্কালের মধ্যেই আমলে ধাবিত হও, যেন অকস্মাৎই মৃত্যু হানা দিবে আর তোমাদেরকে মাটির ওপর থেকে মাটির মধ্যে টেনে নিবে এবং মাটির টিলা থেকে গর্তের মধ্যে নিক্ষেপ করবে এবং সঙ্গী-সাথী ও প্রশান্তি থেকে ভয় ও নিঃসঙ্গতায় নিয়ে যাবে এবং খোলা আকাশ ও আলো থেকে অন্ধকারে নিয়ে যাবে। আর প্রশস্ত জায়গা থেকে সংকীর্ণতার মধ্যে ঠেলে দিবে যেখানে আত্মীয়-স্বজনদের দেখতে যাওয়া হয় না, অসুস্থকেও দেখতে যাওয়া হয় না আর না কোনো ফরিয়াদে সাড়া দেওয়া হয়।
ইমাম আলী ইবনুল হোসাইন যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : কখনই মিথ্যাবাদীর সাথে ওঠাবসা করবে না। কারণ, সে হলো মরীচিকাসদৃশ, দূরকে করে নিকট এবং নিকটকে তোমার কাছে দূর করে দিবে। কখনই ফাসেক ও খারাপ ব্যক্তির সাথে চলাফেরা করবে না। কেননা, সে তোমাকে এক লোকমা কিংবা তার কম মূল্যে বিক্রি করে দিবে। কৃপণ লোকের সহচর হবে না। কেননা, তার প্রতি তোমার চরম প্রয়োজনের দিনে সে তোমাকে ত্যাগ করবে। কোনো বোকার বন্ধু হয়ো না। সে তোমার উপকার করতে চেয়ে ক্ষতি করে বসবে। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর সাথেও বন্ধুত্ব কর না। কারণ, আমি তাকে কোরআনে অভিশপ্ত পেয়েছি।
ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি আল্লাহ্্র অধিকতর প্রিয় যে অধিকতর সৎকর্মশীল। আর নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আল্লাহ্্র নিকট সে-ই বেশি মর্যাদাশীল যে তাঁর নিকট যা আছে তার প্রতি বেশি আগ্রহশীল। আর তাঁর আযাব থেকে সে-ই বেশি নাজাত লাভকারী যে তোমাদের মধ্য থেকে আল্লাহ্্কে বেশি ভয় করে।
(তুহাফুল উকূল থেকে সংকলিত)
অনুবাদ : আব্দুল কুদ্দুস বাদশা