মঙ্গলবার, ১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

রায়িসির সফর: উন্মোচিত হচ্ছে ইরান ও ওমানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

পোস্ট হয়েছে: মে ২৫, ২০২২ 

news-image

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি একদিনের সফরে সোমবার ওমান গিয়েছিলেন। এ সফরের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট রায়িসির সফরে জ্বালানী, পরিবহন, পর্যটন, ক্রীড়া, পরিবেশ, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা শক্তিশালী করতে দু’দেশের মধ্যে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হচ্ছে তেহরান ও মাস্কটের মধ্যে সহযোগিতা দিনদিন সম্প্রসারিত হচ্ছে।

ওমানের নতুন সুলতান হাইসাম বিন তারিক আল সাঈদের শাসনামলে এটি রায়িসির প্রথম মাস্কাট সফর এবং দেশের ১৩তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে পঞ্চম বিদেশ সফর। ইরান ও ওমান বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ১২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। এসব চুক্তি ও সমঝোতা দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে তেহরান ও মাস্কাটের আগ্রহের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

এর আগে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের সুযোগ খতিয়ে দেখতে ইরানের ব্যাবসায়ী এবং অর্থনৈতিক কর্মীর সমন্বয়ে গঠিত ৫০ জনের একটি প্রতিনিধি দল ওমান সফরে যান। এর মাধ্যমে এটা দেখা যাচ্ছে যে সরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও সহযোগিতা সমান্তরালে এগিয়ে যাচ্ছে।

ওমান নিউজ এজন্সি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২ হাজার সাতশো ১০টি ইরানি কোম্পানি ওমানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছে যার মধ্যে এক হাজার একশো ৬৩টি কোম্পানি শতভাগ ইরানি মালিকানাধীন এবং বাকি ১ হাজার পাচশো ৪৭টি কোম্পানি ইরানি এবং ওমানিদের অংশীদারিত্বের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

বিরাজমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সহযোগিতাকে বৃদ্ধি করার ব্যাপারে প্রবল ইচ্ছা এবং আকাঙ্খার মাধ্যমে এটা প্রতিয়মান হচ্ছে যে তেহরান ও মাস্কাট বহুকাল থেকেই একে অন্যের সঙ্গে রাজনৈতিক সুসম্পর্ককে উপভোগ করে আসছে।

যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে, কিন্তু কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছাতে এখনও অনেক পথ বাকি। প্রথম ধাপে, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেনের পরিমাণ বর্তমান স্তরের দ্বিগুণ করতে, অর্থাৎ দেড় বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানোর পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক বিরাজ করছে সে লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব হবে না বলেই বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন।

তেহরান ও মাস্কাট পর্যটন ক্ষেত্রেও তাদের সহযোগিতা বাড়াতে পারে কারণ মাস্কাট এবং তেহরানের মধ্যে পর্যটন প্রকল্প বাস্তবায়নের অনেক সুযোগ রয়েছে। ইরান ও ওমান ভৌগোলিকভাবে খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে এবং তাদের অনেক ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকার পাশাপাশি পারস্পরিক অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে।

ইরান-ওমান সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার গুরুত্ব এবং এ ক্ষেত্রে দুই দেশের সক্রিয় অংশ গ্রহণের অর্থ হল দুই দেশ বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক, আঞ্চলিক এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে গঠনমূলক সহযোগিতার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তারা এখন এটিকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অন্যতম সমর্থক হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। পার্সটুডে/