মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে ইরানের প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আহবান
পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ১৫, ২০১৭
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমানের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেছেন, বিশ্বের সব মুসলিম দেশ সোচ্চার হলে মিয়ানমার তার নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশ মিয়ানমারকে চাপ দিতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সফররত ইরানের সামাজিক বিষয়ক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ডা. সৈয়দ হাদি আইয়াজি এবং ইরান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. আলী আসগর পায়ভান্দির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ের দফতরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি তাদের কাছে এ আহ্বান জানান।
এসময় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মোঃ সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলামসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তার নিজের মানুষদের মারছে। নিজেদের জনগণের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। সেখান থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়ে তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়ে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। এভাবে বাড়তি ছয়-সাত লাখ মানুষের সেবা দীর্ঘদিন চালিয়ে যাওয়া সীমিত সম্পদের বাংলাদেশের পক্ষে দূরূহ। তাই অবিলম্বে মিয়ানমার সরকার সেদেশে হত্যা এবং ঘর-বাড়ি জ্বালানো বন্ধ করে বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সাহায্য করায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ইরানের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী বলেন, মানবতার এই দৃষ্টান্তের ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় ইরান খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ সহায়তা দিচ্ছে। টেকনাফ ও উখিয়ায় ইরান সরকার অস্থায়ীভাবে একটি রেফারেল হাসপাতাল ও পাঁচটি মোবাইল ক্লিনিকের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এজন্য সেই এলাকায় ভূমি বরাদ্দে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
ইরানের রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান শরাণার্থী ক্যাম্প ও তার আশেপাশে পরিবেশগত স্বাস্থ্য বিপর্যয় ও সংক্রামক রোগের বিস্তার যেন না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসায় ইরানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্ব আরো জোরদার হবে।
তিনি টেকনাফ ও উখিয়ায় হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপনে দ্রুত জমি বরাদ্দের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এসময় মন্ত্রী বাংলাদেশে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ইরানের আরো শিক্ষার্থী পাঠানো এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিকমানে ওষুধ আমদানীতে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।- বাসস।