মঙ্গলবার, ২৬শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

English

বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদায় ইরানের ইয়াযদ শহর

পোস্ট হয়েছে: জুলাই ১০, ২০১৭ 

news-image

বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পেল ইরানের কেন্দ্রীয় পর্বতমালার পাশে অবস্থিত ইয়াযদ প্রদেশের প্রধান শহর ‘ইয়াযদ’। ইরানের অন্যতম প্রাচীন, বৃহত্তম ও  সুন্দর এ শহরটিকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ বা বিশ্ব ঐতিহ্য বলে ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ‘ইউনেস্কো’।

রোববার পোল্যান্ডের ক্র্যাকো শহরে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম অধিবেশনের বৈঠকে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে, শহরটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায়।

ইরানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, হস্তশিল্প ও পর্যটন সংস্থার উপ-প্রধান মোহাম্মাদ হাসান তালেবিয়ান এর আগে জানান, ‘আরাসবারান প্রোটেক্টেড জোন ইরানের দ্বিতীয় প্রাকৃতিক শহর হিসেবে ইউনেস্কোর নিবন্ধনের জন্য মনোনীত হয়েছে। অন্যদিকে, ইয়াযদ ইরানের প্রথম শহর হিসেবে বিশ্ব ঐতিহ্যর জন্য মনোনীত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ইয়াযদ ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মরুভূমি শহর। এখানে রয়েছে নতুনত্ব ও সৃজনশীলতার স্বতন্ত্র লক্ষণ। যার বেশিরভাগ খ্রিস্টপূর্ব ১০ম থেকে ২০ শতাব্দীর মধ্যে গড়ে উঠেছে।’

ইয়াযদ মানে হলো পাক পবিত্র। ইয়াযদ শহরটির বৈশিষ্ট্য তার নাম থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সেখানে রয়েছে ধর্মীয় স্থাপত্যের বিপুল সংগ্রহ। আরও রয়েছে বিভিন্ন শাসকের সময়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ইসলামি স্থাপত্যের উপাদান।

ইয়াযদ শহরের স্থাপনাগুলোর ইতিহাস নিয়ে কিছুটা মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, এখানকার প্রথম স্থাপনাটি গড়ে উঠেছে অ্যালেক্সান্ডারের হাতে। বলা হয়ে থাকে, অ্যালেক্সান্ডার এই শহরটি তৈরি করেছিলেন কারাগার হিসেবে। যারা শাস্তিপ্রাপ্ত তাদের জন্য এবং নির্বাসনে দেয়ার জন্য এই শহরটি গড়ে তুলেছেন তিনি। এ কারণে ‘অ্যালেক্সান্ডারের কারাগার’ নামেও এই শহরের প্রসিদ্ধি আছে।

বলা হয়ে থাকে, অ্যালেক্সান্ডার যখন ইরানের ওপর দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তখন তেহরানের কাছাকাছি ‘রেই’ নামক বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক শহরের বেশ কজন ব্যক্তিত্ব তার বিরোধিতা করেছিলেন। অ্যালেক্সান্ডার সেইসব মহান ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ইয়াযদ অতিক্রম করার সময় সেখানকার একটি কূপে বন্দি করে রেখেছিলেন। ওই স্থানটিকে গ্রিক ভাষায় জিন্দান বা কারাগার বলে নাম রাখেন।

অ্যালেক্সান্ডার যখন ইয়াযদ থেকে বেরিয়ে যান তখন ওই কারাবন্দিরাই রক্ষীদের সাহায্য নিয়ে শহরটিকে আবাদ করার উদ্যোগ নেন। অনেক ইতিহাসবিদের মতে, ইয়াযদের গোড়াপত্তন হয়েছিল সাসানি শাসক প্রথম ইয়াযদগার্দ্ এর হাতে। তার নামের সাথে মিল রেখেই শহরটির নাম রাখা হয়েছে ইয়াযদ।

হিজরি পঞ্চম শতক থেকে এই শহরটির বিকাশ ঘটে। আতাবাকিরাই এই শহরের উন্নয়নে অবদান রেখেছিল। ইয়াযদেও দেখার আছে অনেক কিছু। বিশ্ব পর্যটকরা এই শহরে প্রায়ই বেড়াতে আসেন ইয়াযদের মসজিদে কাবির, ফাহরাজ জামে মসজিদ, সাইয়্যেদ রোকনুদ্দিনের সমাধি, দৌলতাবাদ বাগিচা, আমিরে চাখমখ মসজিদ, অগ্নিমন্দির, টাওয়ার ইত্যাদি দেখার জন্য।

সূত্র: ইরান ডেইলি।