মঙ্গলবার, ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

ইরানে পালিত হল জাতীয় রুমি দিবস

পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ২, ২০২২ 

news-image

সর্বশ্রেষ্ঠ মরমি কবি জালাল উদ্দিন রুমির স্মরণে ইরানে পালিত হল জাতীয় রুমি দিবস। ইরানি ক্যালেন্ডার মাসের ৮ মেহর হিসেবে এবছর ৩০ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালিত হয়। এ উপলক্ষে দেশটিতে উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রুমিকে একজন মহাকবি, দার্শনিক, আইনজ্ঞ, ধর্মবেত্তা ও আধ্যাত্মিক গুরু মনে করা হয়।ইরান অসংখ্য বিখ্যাত মানুষ ও কবির আবাসস্থল। তাদের অন্যতম জগত বিখ্যাত কবি রুমি। সবার মাঝে তিনি পরিচিত আছেন মাওলানা রুমি, মৌলভি রুমি নামে তবে শুধু রুমি নামে বেশি জনপ্রিয়। তিনি ইরানে ব্যাপকভাবে মাওলানা নামে পরিচিত এবং তুরস্কে মেভলানা নামে পরিচিত।সুফিবাদের আলোচনায় যে নামটি অবশ্যই উচ্চারিত হবে সেটি রুমির। তিনি  ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন পারস্য সাম্রাজ্যের পূর্ব উপকূলের বাল্খ নগরীতে ( যা বর্তমানে আফগানিস্তানের অংশ ) স্থানীয় ফার্সি-ভাষী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।

রুমির শিক্ষার সাধারণ বিষয়বস্তু ছিল অন্যান্য ফারসি সাহিত্যের মরমি এবং সুফি কবিদের মত তাওহিদ শিক্ষা। তাঁর কবিতা সারাবিশ্বে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বিভিন্ন শ্রেণিতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। রুমিকে যুক্তরাষ্ট্রের “সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি” এবং “বেস্ট সেলিং পয়েট” বলা হয়। রুমির সাহিত্যকর্ম বেশিরভাগই ফারসি ভাষায় রচিত হলেও তিনি অনেক স্তবক তুর্কি, আরবি এবং গ্রীক ভাষায়ও রচনা করেছেন। তাঁর লেখা “মসনবী” কে ফারসি ভাষায় লেখা শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ হিসাবে তুলনা করা হয়।তাঁর কবিতা ফারসি সাহিত্যকে প্রভাবিত করেছে। শুধু তাই নয় তুর্কি সাহিত্য, উসমানীয় তুর্কি সাহিত্য, আজারবাইজান সাহিত্য, পাঞ্জাবের কবিতা, হিন্দি সাহিত্য, উর্দু সাহিত্যকেও অনেক প্রভাবিত করেছে।শামস তাবরিজির সাথে যখন রুমির প্রথম সাক্ষাৎ হয় তখন রুমির বয়স মাত্র ২১ বছর। সেই সময় মাওলানা রুমিকে শিষ্য হিসেবে পছন্দ করেন তাবরিজি, কারণ বয়স কম হলেও তিনি রুমির ভেতর জ্ঞানের বিশালতা আর গভীরতা খুঁজে পান, তবে আরও একটু পরিপক্ব বয়সের আশায় তাবরিজি তখনও রুমিকে কোনোপ্রকার শিষ্যত্বের ইঙ্গিত দেননি!অনেক বছর পর যখন মাওলানা রুমির বয়স ৪০ বছর হয়, তখন শামস তাবরিজি আবার রুমিকে খুঁজে নেন। কারণ তিনি মনে করতেন এটাই সেই বয়স যখন রুমি নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন আকাশের বিশালতায়! তার সাথে আলাপ-আলোচনায় রুমি যেন অন্য এক জগতের সন্ধান পান, যেখানে দুনিয়ার অনেক বড় বিষয়গুলো ক্ষুদ্র মনে হতে থাকে। নিজেদের আলাপে ভর করে জ্ঞানের নতুন আলোর আরও গভীরে যেতে রুমি তাবরিজিকে বাসায় নিয়ে আসেন, আলাপ-আলোচনায় জ্ঞান গ্রহণের ভেতর দিয়ে সময় কাটাতে থাকেন।রুমির দেখানো মগ্ন হওয়ার ধারা আজও বিদ্যমান সুফি নৃত্য নামে। সুফিবাদের ইতিহাসে এটি অবশ্যই এক নতুন আলো, যে আলো দিয়ে সুফিবাদের তত্ত্ব আরও আলোকিত হয়েছে। কারণ সুফিবাদের ইতিহাসে কখনও কেউ নিজেকে ধরে রাখতে চায়নি, বরং চেয়েছে স্রষ্টার কাছে সঁপে দিতে। সূত্র: মেহর নিউজ এজেন্সি।