ইরানের ভাষা, ধর্ম ও জাতিসমূহ
পোস্ট হয়েছে: জুন ৩, ২০২০
ফারসি ইরানের রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক ভাষা। ফারসি ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্যতম। ইরানে ইসলাম প্রবেশের পর কিছু সময় আরবি ভাষা ইরানের রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ একইভাবে বা অব্যাহতভাবে ফারসিতে কথাবার্তা বলত। এখনও ইরানের একদল মানুষ ফারসি ছাড়াও স্থানীয় ও গোত্রীয় ভাষাগুলো, যেমন : কুর্দি, লোরী, গিলাকী, বালুচি, তোর্কি ও আরবিতে কথা বলে। শিক্ষামাধ্যম হিসেবে সাধারণভাবে ফারসি ব্যবহৃত হলেও অন্য ভাষাভাষী এলাকাগুলোতে স্থানীয় ভাষাগুলো শিক্ষামাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ইসলাম ইরানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম। খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে ইরান মালভূমির অধিবাসীরা ইসলাম গ্রহণ করে। ক্রমান্বয়ে ইরানে শিয়া মাযহাবের প্রভাব বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ শিয়া মাযহাবের অনুসারীতে পরিণত হয়। তবে এখানে বিভিন্ন সুন্নি মাযহাবের অনুসারীরাও আছে।
একইভাবে ইরানের সংবিধান খ্রিস্ট, ইয়াহুদি ও যরথুস্ত্রীয় ধর্মকে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। এ ধর্মগুলোর অনুসারীরা স্বাধীনভাবে ইরানে বসবাস করছে। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে, ইরানের জনসংখ্যার শতকরা ৯৯ ভাগের বেশি মুসলমান। বিভিন্ন জাতি বা সম্প্রদায় ইরানে বসবাস করে এবং তাদের সকলেই ইরানের নাগরিক। ইরানি জাতিগুলোর মধ্য থেকে আযারবাইজানি তুর্কিরা উত্তর-পশ্চিমে, কুর্দিরা পশ্চিমে, লোরীরা দক্ষিণ-পশ্চিমে, বালুচরা দক্ষিণ-পূর্বে, আরবরা দক্ষিণে এবং তুর্কমানরা উত্তর-পূর্বে বসবাস করে। অবশ্য ইরানের বেশিরভাগ জনগণই ফার্স্ বা ফার্সীভাষী পরস্য বংশোদ্ভূতÑ যারা ইরানের সকল প্রদেশে বসবাস করে।
ইরানের জনসংখ্যার অন্য একটি অংশ যাযাবরÑ যাদেরকে উপজাতি হিসেবে অভিহিত করা হয়। উপজাতিরা ইরানের কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমের প্রদেশগুলোতে বসবাস করে এবং তাদের অধিকাংশ পশুপালক। উজাতিরা তাঁবুতে বসবাস করে। তারা গ্রীষ্মকালে নিজেদের পশুপালের সাথে অধিকতর ঠা-া এলাকায় এবং শীতকালে অধিকতর গরম অঞ্চলগুলোতে যায়। প্রত্যেক গোত্র বা সম্প্রদায়ের নিজস্ব শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন এলাকা এবং স্থানান্তরিত হওয়ার বিশেষ সময় রয়েছে।
ইরানি জাতি বা গোত্রগুলোর প্রতিটির বিশেষ ধরনের রীতি-নীতি আছে। কিন্তু অধিকাংশ নিয়ম-কানুন বা রীতি-নীতি জাতীয় এবং ধর্মীয়; সেগুলো তাদের মধ্যে অভিন্ন।
অনুবাদ : সুজন পারভেজ