ইমাম আলী ইবনুল হোসাইন যায়নুল আবেদীন (আ.)
পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
মূল : ইমাম আলী ইবনুল হোসাইন যায়নুল আবেদীন (আ.)
অনুবাদ : আব্দুল কুদ্দুস বাদশা
প্রকাশনায় : মনির হোসেন পিন্টু
অন্যধারা
৩৮/২-ক, বাংলাবাজার।
ফোন : ০১৯২০২১৬৯৬৮
দাম : ৪০০/-
‘ইমাম যায়নুল আবেদীন’ নামে সুপ্রসিদ্ধ ইমাম আলী ইবনুল হুসাইন (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক) ৩৮ হিজরির ৩ শা’বান পবিত্র মদীনা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রপৌত্র। তাঁর পিতা ছিলেন ইমাম হুসাইন (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)। তাঁর মাতার নাম ছিল শাহ্রবানু। জীবনের প্রথম দুটি বছর তিনি আমীরুল মুমিনীন হযরত আলীর (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক) কোলে প্রতিপালিত হন। হযরত আলীর শাহাদাতের পর তিনি বেহেশতে যুবকদের সর্দারদ্বয় তাঁর চাচা ইমাম হাসান ও পিতা ইমাম হুসাইনের সযতœ তত্ত্বাবধানে ঐশী শিক্ষা-প্রশিক্ষণ পেয়ে বড় হয়ে ওঠেন। যুবক বয়সে কারবালার প্রান্তরে সংঘটিত হৃদয়বিদারক ঘটনায় নিজের পরিজন, নিকটাত্মীয় ও বন্ধুদের শাহাদাতের স্মৃতিকে বুকে ধারণ করে তিনি প্রকৃত ইসলামের শিক্ষায় মানুষকে শিক্ষিত করার জন্য নিজেকে নিয়োগ করেন। মহান আল্লাহর প্রতি আত্মনিবেদিত থাকা ও একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করার মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন সকলের কাছে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় এক মহান ব্যক্তিত্ব। তিনি মানুষের কাছে ‘যায়নুল আবেদীন’ (ইবাদতকারীদের সৌন্দর্য) ও ‘সাজ্জাদ’ (অধিক অধিক সিজদাকারী) নামে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। ইসলামের এই মহান ব্যক্তিত্ব ৯৫ হিজরির ২৫ মুহররম তৎকালীন উমাইয়্যা শাসক কর্তৃক বিষপ্রয়োগের ফলে শাহাদাত বরণ করেন। মদীনা নগরীর ‘জান্নাতুল বাকী’তে তাঁর পবিত্র রওযা মুবারক অবস্থিত।
‘সহীফায়ে সাজ্জাদিয়া’ একটি দোয়ার গ্রন্থ। ইমাম যায়নুল আবেদীন (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক) কারবালার বিষাদময় ঘটনার পর থেকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মহান আল্লাহর কাছে যেসকল দোয়া ও মোনাজাত করেছেন তার একটি সংকলন এই ‘সহীফায়ে সাজ্জাদিয়া’। এটি ‘যাবুরে আলে মুহাম্মাদ’ তথা ‘মহানবী (সা.)-এর বংশধরের যাবুর’ নামেও খ্যাত। এতে বর্ণিত মোট দোয়ার সংখ্যা ৫৪টি। একই সাথে এটি ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞানের অমূল্য ভা-ারও বটে। এই গ্রন্থে যেমন ইসলামি চিন্তা-বিশ্বাস ও নীতি-নৈতিকতাকে দোয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে, তেমনি ইসলামের সাংস্কৃতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিষয়াবলিসহ কিছু কিছু প্রাকৃতিক নিয়ম ও শরীয়তের বিধানও দোয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। দোয়া ও মোনাজাতগুলো মহান আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্ককে অভিনব উপায়ে উপস্থাপন করে। আল্লাহ্র সাথে সম্পর্ক অংশে দোয়াগুলো বর্ণিত হয়েছে বিভিন্ন যুগ ও বিভিন্ন পরিস্থিতির উপযোগী করে। এই গ্রন্থ মহান আল্লাহ্র কাছে অনুনয়-বিনয় এবং তাঁর দরবারে মনোস্কামনা প্রার্থনার পদ্ধতি ও মানুষকে পার্থিব জীবন থেকে বিমুক্ত হয়ে আল্লাহমুখী হওয়ার শিক্ষা দেয়।
‘সহীফা’র সর্বমোট ৫৪টি দোয়ার মধ্যে কিছু কিছু দোয়া বছরে একবার পাঠ করা হয়, যেমন : ‘দোয়ায়ে আরাফাহ’ এবং রমযান মাসের বিদায়ের দোয়া। আবার কিছু কিছু দোয়া মাসে একবার পড়তে হয়, যেমন চাঁদ দেখার দোয়া। আর কিছু কিছু দোয়া রয়েছে যেগুলো সপ্তাহে একবার এবং কিছু কিছু দোয়া প্রত্যেক দিবানিশিতে একবার করে পড়তে হয়।
১৩ শতাব্দীর অধিককাল যাবত এ গ্রন্থটি সকল ধর্মভীরু, সংযমব্রতী সাধক পুরুষ এবং প-িত ও লেখকের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়ে এসেছে। এক কথায় বলা যায়, এটি ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের একটি পরম আধ্যাত্মিক গুপ্তধনের ভা-ার।