শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

English

স্মরণীয় বাণী

পোস্ট হয়েছে: মে ৯, ২০১৭ 

মহানবী (সা.) বলেন : চারটি জিনিস রয়েছে যা আমার প্রত্যেক হৃদয়বান বুদ্ধিমান উম্মতের জন্য আবশ্যক। আরজ করা হলো : হে রাসূলুল্লাহ্! সেগুলো কী কী? তিনি বললেন : জ্ঞান শ্রবণ করা, তা রক্ষা করা, তা প্রচার করা এবং তা মেনে চলা।

মহানবী (সা.) বলেন : আমি আমার উম্মতের ওপর তিনটি জিনিসের কারণে উদ্বিগ্ন : কার্পণ্যের অতিরিক্ত প্রবণতা, রিপুর কামনার অনুসরণ আর পথভ্রষ্ট নেতা।

মহানবী (সা.) বলেন : কল্যাণের চেয়ে কল্যাণকারী হলো উত্তম আর মন্দের চেয়েও মন্দকারী ব্যক্তি নিকৃষ্টতর।

মহানবী (সা.) বলেন : প্রাচুর্য অধিক ধন-সম্পদের অধিকারী হওয়ার মধ্যে নয়; বরং প্রাচুর্য হলো মনের অমুখাপেক্ষিতার মধ্যে।

মহানবী (সা.) বলেন : ভালো কাজসমূহ মন্দ মৃত্যু থেকে রক্ষা করে আর গোপনে দান আল্লাহর ক্রোধকে প্রশমিত করে। আর আত্মীয়তার সম্পর্ককে জোড়া লাগানো আয়ু বাড়িয়ে দেয়। আর প্রত্যেক সদাচারই হলো সাদাকাহ্। আর দুনিয়ার সদাচারী জন পরকালে সদাচার লাভের যোগ্য। আর দুনিয়ার মন্দকারীরা পরকালে মন্দ লাভ করার যোগ্য। আর সদাচারীরাই সর্বপ্রথম বেহেশতে প্রবেশ করবে।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময়ক্ষণই হলো সর্বোৎকৃষ্ট দুর্গ। কেননা, প্রত্যেকেরই সঙ্গে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রহরীরা রয়েছে যারা তাকে প্রহরা দেয় পাছে কোনো কুয়ায় পতিত হয় কিংবা কোনো দেয়াল তার মাথায় ধসে পড়ে কিংবা কোনো বন্য পশু তার ক্ষতি করে। কিন্তু যখন তার মৃত্যুক্ষণ উপস্থিত হয় তখন তাকে তার মৃত্যুর সামনে ছেড়ে দেয়।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : যে ব্যক্তি চারটি জিনিস থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে তার কোনো মন্দ না হওয়াই সমীচীন। বলা হলো : হে আমীরুল মুমিনীন! সে চারটি জিনিস কী কী? ইমাম বললেন : তড়িঘড়ি, একগুঁয়েমি, স্বার্থপরতা, অলসতা।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : যে ব্যক্তি দুনিয়ায় সংযমশীল হয় সে দুনিয়ার লাঞ্ছনা থেকে বিচলিত হয় না। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার সম্মান লাভের জন্য প্রতিযোগিতা করে না, আল্লাহর সৃষ্টির পথপ্রদর্শন (এর প্রতি নির্ভরতা) ব্যতীতই তাকে পথপ্রদর্শন করে থাকেন। আর তাকে শিক্ষা গ্রহণ ব্যতীতই জ্ঞান দান করেন এবং প্রজ্ঞাকে তার বক্ষে স্থির করে দেন আর তার জিহ্বায় প্রবাহিত করেন।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : যেহেতু সবকিছুই জুড়ি বাঁধলো, কাজেই অলসতা আর অক্ষমতাও জুড়ি বাঁধলো এবং দরিদ্রতা তাদের থেকে জন্ম নিল।

ইমাম হাসান (আ.) বলেন : জীবিকার জন্য বিজয়ের উদ্দেশ্যে চেষ্টারত ব্যক্তির মতো তৎপর হয়ো না। আবার আত্মসমর্পিতের মতো তাকদীরের ওপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত বসে থেক না। নিশ্চয় রুজির আধিক্য চাওয়া সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত। আর রুজি চাওয়ার ব্যাপারে মধ্যপন্থা অবলম্বন সততার অঙ্গ। আর সততা রুজির প্রতিবন্ধক নয়। আর লোভ আধিক্য আনে না। রুজি হলো বণ্টনকৃত। আর লোভ পাপ আনে।

ইমাম হাসান (আ.) বলেন : … যখন আল্লাহ্ তোমাদের (কাউকে) পুত্র দান করেন আর তাকে অভিনন্দন জানাবার জন্য তোমরা যাবে তখন (তাকে) বলবে : এর দানকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর এবং তোমাকে যা দান করা হয়েছে তা মোবারক হোক। আল্লাহ্ তাকে যুবকে পরিণত করুন এবং তাকে ভালোভাবে গড়ে তোলার তৌফিক তোমাকে দিন।

ইমাম আলী ইবনুল হোসাইন যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : মানুষের কাছে প্রয়োজনের কথা বলা লাঞ্ছনা আনে এবং লজ্জাকে কেড়ে নেয় আর ব্যক্তিত্বের হানি ঘটায়। এটাই প্রকৃত দারিদ্র্য। আর মানুষের কাছে কম চাওয়াই হলো প্রকৃত অভাবমুক্ততা।

ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : পাঁচটি বাক্য রয়েছে যদি সেগুলোর পেছনে ধাবিত হও এবং এজন্য তোমার বাহনকে শীর্ণ কর তাহলে এমন কিছু অর্জন করবে যার কোনো তুলনা নেই। কোনো বান্দা নিজের গোনাহ ছাড়া আর কিছুরই ভয় করবে না, আর স্বীয় প্রতিপালক ভিন্ন আর কারো ওপর ভরসা করবে না, অজ্ঞ ব্যক্তি যখন তাকে এমন কিছু জিজ্ঞেস করে যা সে জানে না, তা শিখে নিতে লজ্জাবোধ করে না, আর ঈমানের সাথে ধৈর্যের তেমনই সম্পর্ক, দেহের সাথে মাথার যেমন। যার ধৈর্য নেই তার ঈমান নেই।

(তুহাফুল উকূল থেকে সংকলিত)
অনুবাদ : আব্দুল কুদ্দুস বাদশা